Source LINK
॥ এক ॥
আমাদের বাংলাদেশে সরকারি তত্ত্বাবধানে দুই ধারায় শিক্ষা চলে আসছে। একটি সাধারণ শিক্ষা অপরটি মাদরাসা শিক্ষা। সরকার এ বছর (২০১৫) শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাদরাসার ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) স্তরের বই প্রণয়ন করেছে। এ বৈষম্য দূর করতে গিয়ে এমন কিছু লেখা উপস্থাপন করা হয়েছে যা মাদরাসা শিক্ষার সাথে মানানসইতো নয় বরং সাংঘর্ষিক।
তাহলে মাদরাসার পাঠ্য বইয়ে ইসলামবিরোধী লেখা কার স্বার্থে? ভবিষ্যতে মাদরাসা শিক্ষার খুলুসিয়ত বা গুরুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। মাদরাসা শিক্ষার আর কোন গুরুত্ব থাকবে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এবং মাদরাসার নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণির- ‘আমার বাংলা বই’ : ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’। প্রথমে বলতে চাই কোমলমতি শিশুদের জন্য এত বড় বই দেয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি। বইটির পৃষ্ঠা তথা পাঠ্যসূচি আরো কম হলে তাদের বয়স অনুপাতে মানানসই হতো। এবার আসা যাক বইয়ের লেখা সম্পর্কে। বইটির সংকলন, রচনা ও সম্পাদনায় ছিলেন, শফিউল আলম, মাহবুবুল হক, সৈয়দ আজিজুল হক, নুরজাহান বেগম। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যপুস্তকরূপে নির্ধারিত। বইয়ের পৃষ্ঠা-৭২। এ বইয়ের পাঠ নং-২ পৃষ্ঠায় নং-২, ৩-এ দেয়া হয়েছে ১১টি শিশুর ছবিসহ নাম। এখানে তাদের নামে মুসলিম সংস্কৃতি রক্ষা করা হয়নি। নাম দেয়া হয়েছে অমি, আলো, ইমন, ঈশিতা, উমেদ, উর্মি, এনাম, ঐশী, ওমর ও ঔছন। এখানে এনাম ও ওমর বাদে ৮টি নামই মুসলিম সংস্কৃতির সাথে কোন মিল নেই। পাঠ-৩, পৃষ্ঠা নং (৪)। এ পাঠে লেখা রয়েছে ‘আমরা ভোরে ঘুম থেকে উঠি। দাঁত মাজি। হাত-মুখ ধুই। আমরা খাওয়ার আগে হাত ধুই। খাওয়ার পরে হাত ধুই। আমরা পড়ার সময় পড়ি। খেলার সময় খেলি।’ মুসলমানের সন্তান হিসেবে, ঘুম থেকে উঠে অযু করি। নামাজ পড়ি। মক্তবে যাই। মাদরাসায় যাই। মাদরাসার পাঠ্য বই হিসেবে এগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন উচিত ছিল। কেননা শিশুর এখনই সময় এগুলো শিখার। পাঠ-৪, পৃষ্ঠা নং (৫)। ‘আতা গাছে তোতা পাখি/ ডালিম গাছে মউ। এত ডাকি তবু কথা/ কও না কেন বউ।’ ৫-৭ বছরের শিশুদের বউ শিখাবার কোন প্রয়োজন আছে কী? না বাল্যবিবাহের প্রতি এটা দ্বারা উদ্বুদ্ধ করা? অথচ ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদের শিশু উপযোগী কবিতা রয়েছে তা দেয়া যেত। পাঠ-৭, পৃষ্ঠা নং ১১। এ পাঠে অ-তে ‘অজ চরে’ শব্দ আনা হয়েছে। এটা প্রায় বিলুপ্ত ও প্রায় মৃত সংস্কৃত শব্দ। একটি কঠিন হিন্দয়ানী শব্দ। যার অধিকাংশ অর্থ হিন্দুদের দেব দেবীকে বুঝায়। অভিধানে, ‘অজ’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে, ঈশ্বর, ব্রহ্মা, বিঞ্চনু, শিব, ছাগল, দশরতের পিতা ইত্যাদি। একটি কঠিন এবং হিন্দুয়ানী শব্দ মাদরাসার বইয়ে দেয়ার কোন অর্থ আছে? যে শব্দের ব্যবহার হাজারেও একবার হয় না। বরং ‘অ’ তে অযু শব্দ আনা যেত। এটা পবিত্রতা বুঝায়। পবিত্রতা সকল ধর্মে আছে। তা না করে রামায়ন আর গীতার পরিভাষা আনা হয়েছে। শিশুদের এসব শব্দ চাপিয়ে দেয়া ঠিক হচ্ছে না। এটা মাদরাসার শিক্ষার বিরুদ্ধে গভীর ষড়ন্ত্রের পরিচয় বহন করে। পাঠ-১১, পৃষ্ঠা নং ১৫। ‘এ’ দিয়ে-একতারা। একতারা গানের বাজনা। বাজনা ইসলামে তথা মাদরাসা শিক্ষায় হারাম। এখানে ‘এ’-দিয়ে একতা বা এক আল্লাহকে বুঝানো যেত। পাঠ-১৪ এর ১৮ পৃষ্ঠাতে-কবি সুফিয়া কামালের ‘ইতল বিতল’ নামে একটি ছড়া ছাপা হয়েছে। যার কোন অর্থ নাই। ‘ইতল বিতল গাছের পাতা/ গাছের তলায় ব্যাঙের ছাতা। বৃষ্টি পড়ে ভাঙ্গে ছাতা/ ডোবায় ডুবে ব্যাঙের মাথা।’ এ ছড়া থেকে শিশুদের কোন শিক্ষণীয় কিছু নেই। সুফিয় কামালের শিক্ষণীয় অনেক কবিতা রয়েছে। পাঠ-১৯, পৃষ্ঠা ২৬-এ ‘ন’ দিয়ে নদীর জলে নাও চলে। পানির বদলে হিন্দুর ‘জল’ প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত কেন? পানির প্রয়োজন হলে মুসলমানগন কখনো ‘জল’তো বলে না। আর তো মাদরাসা শিক্ষায় দেয়া হয়েছে জল শব্দ। এটা কিসের জন্য শিক্ষা? এ বইটিতে ‘বউ’ শিখাতে শিশুদের পিছন ছাড়ছে না। পাঠ-২১, পৃষ্ঠা ৩০-এ রোকনুজ্জামানের-‘বাক বাকুম পায়রা/ মাথায় দিয়ে টায়রা/ বউ সাজবে কালকি/ চড়বে সোনার পালকি।’ এ ছড়া থেকে কোমলতি শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় কিছু নেই। এগুলো আবোল-তাবোল। পাঠ-২৭ পৃষ্ঠা ৩৯-এ সুকুমার রায়ের-‘চলে হন হন ছোটে পনপন...।’ শিশুদের জন্য কিছুই শিক্ষণীয় নেই। এগুলো তামাশা ছাড়া কিছু নয়। পাঠ-৪০ পৃষ্ঠা ৫২-তে ‘ে া’ দিয়ে বাক্য গঠন বুঝাতে গিয়ে ‘ঢোলে’র ছবি দেয়া হয়েছে। ঢোলের সাথে মাদরাসার শিক্ষার্থী শিশুদের তো কোন সম্পর্ক নেই। ঢোলের সাথে হিন্দু শিশুদের সম্পর্ক থাকতে পারে। তার মানে কি ভবিষ্যতে মাদরাসায় ঢোল বাজাতে হবে? পাঠ-৪৬, পৃষ্ঠা ৫-এ ‘শুভ ও দাদিমা’ এটা মুসলমান সমাজে ব্যবহার নেই। আছে মুসলিম রীতিনীতি। দাদীর আশীর্বাদ- ‘বেঁচে থাকো ভাই’। এ ধরনের ডায়ালগ ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে বলা হয়। মুসলমানরা বলেন বা মাদরাসায় শিক্ষা দেয়া হয়, আল্লাহ তোমার উপর রহমত ও বরকত দিন। পাঠ-৪৯ পৃষ্ঠা ৬৩-তে ‘মুমুর সাত দিন’। ‘মুমু রোজ মাদরাসায় যায়... বৃহস্পতিবার ছবি আঁকে। শুক্রবার ছুটির দিন। ওইদিন সে খেলাধুলা করে।’ শুক্রবার বন্ধ দেয়া হয়েছে শুধু খেলাধুলার জন্য? অথচ এ দিন বন্ধ হলো পবিত্র জুমার নামাজের জন্য। এ দিন জুমার নামাজের কথা বলা হলো না, এ দিন কবরস্থানে গিয়ে মৃত আত্মীয়স্বজনের জন্য যিয়ারত করে দোয়া করি ... ইত্যাদি বলা হলে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত শব্দ হতো। আর ছবি আঁকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। অথচ রাসূল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন ছবি অংকনকারীদের বেশি আযাব দেয়া হবে। মাদরাসায় পড়ায়ে কী আমাদের আযাব অর্জন করতে হবে? আর অর্থপূর্ণ নামটাও পাওয়া গেল না! মুমু একটা নাম হলো? অতচ হাশরের দিন নামের কারণে অনেকে নাজাত পাবে। ইবতেদায়ী তৃতীয় শ্রেণি-‘আমার বাংলা বই’ : সংকলন, রচনা ও সম্পাদনা, শফিউল আলম, মাহবুবুল হক, সৈয়দ আজিজুল হক, নুরজাহান বেগম। তারা প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’ও সম্পাদনা করেছেন। ইবতেদায়ী তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’র ‘স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে’ পাঠের একটি লাইনে লেখা রয়েছে- ‘আজ বৃহস্পতিবার। এই দিন শেষের দুই পিরিয়ডে অন্য রকম কাজ হয়। আনন্দে ভরে ওঠে ছাত্রছাত্রীদের মন। এই দুই পিরিয়ডে কোনো দিন গান শেখানো হয়’। লেখার নিচে রয়েছে ছেলেমেয়ের পায়ে পায়ে হাতে হাত রেখে আলাপ আলোচনা করছে এমন কয়েক জনের একটি ছবি। মাদরাসায় গান শিখানো হয় এটা কোন ধরনের কথা? আর ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসার ছবি দিয়ে কী বুঝানো হচ্ছে? অথচ এখানে দেয়া যেত কুরআন তেরাওয়াত, ইসলামী সঙ্গিত বা হামদ-নাত শেখানো হয়। ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসা ও গায়ে গায়ে লাগিয়ে বসা ইসলাম নিষেধ করেছে। বরং তা গুনাহের কাজ। বরং পৃথকভাবে বসা হচ্ছে উত্তম। এ অভ্যাস ছোটবেলা থেকে গড়ে তোলার সময়। অথচ তা না করে উল্টো ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসার ছবি দিয়ে যেন বুঝানো হলো তা এখন থেকে করতে হবে। এ শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা ধ্বংসের পায়তারা। নিঃসন্দেহে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করার একটি ষড়যন্ত্র। এ পাঠের ৩২ পৃষ্ঠায় রয়েছে, ‘খুশিতে সকলে এক সঙ্গে হাততালি দিল’।
॥ এক ॥
আমাদের বাংলাদেশে সরকারি তত্ত্বাবধানে দুই ধারায় শিক্ষা চলে আসছে। একটি সাধারণ শিক্ষা অপরটি মাদরাসা শিক্ষা। সরকার এ বছর (২০১৫) শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাদরাসার ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) স্তরের বই প্রণয়ন করেছে। এ বৈষম্য দূর করতে গিয়ে এমন কিছু লেখা উপস্থাপন করা হয়েছে যা মাদরাসা শিক্ষার সাথে মানানসইতো নয় বরং সাংঘর্ষিক।
তাহলে মাদরাসার পাঠ্য বইয়ে ইসলামবিরোধী লেখা কার স্বার্থে? ভবিষ্যতে মাদরাসা শিক্ষার খুলুসিয়ত বা গুরুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। মাদরাসা শিক্ষার আর কোন গুরুত্ব থাকবে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এবং মাদরাসার নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণির- ‘আমার বাংলা বই’ : ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’। প্রথমে বলতে চাই কোমলমতি শিশুদের জন্য এত বড় বই দেয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি। বইটির পৃষ্ঠা তথা পাঠ্যসূচি আরো কম হলে তাদের বয়স অনুপাতে মানানসই হতো। এবার আসা যাক বইয়ের লেখা সম্পর্কে। বইটির সংকলন, রচনা ও সম্পাদনায় ছিলেন, শফিউল আলম, মাহবুবুল হক, সৈয়দ আজিজুল হক, নুরজাহান বেগম। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যপুস্তকরূপে নির্ধারিত। বইয়ের পৃষ্ঠা-৭২। এ বইয়ের পাঠ নং-২ পৃষ্ঠায় নং-২, ৩-এ দেয়া হয়েছে ১১টি শিশুর ছবিসহ নাম। এখানে তাদের নামে মুসলিম সংস্কৃতি রক্ষা করা হয়নি। নাম দেয়া হয়েছে অমি, আলো, ইমন, ঈশিতা, উমেদ, উর্মি, এনাম, ঐশী, ওমর ও ঔছন। এখানে এনাম ও ওমর বাদে ৮টি নামই মুসলিম সংস্কৃতির সাথে কোন মিল নেই। পাঠ-৩, পৃষ্ঠা নং (৪)। এ পাঠে লেখা রয়েছে ‘আমরা ভোরে ঘুম থেকে উঠি। দাঁত মাজি। হাত-মুখ ধুই। আমরা খাওয়ার আগে হাত ধুই। খাওয়ার পরে হাত ধুই। আমরা পড়ার সময় পড়ি। খেলার সময় খেলি।’ মুসলমানের সন্তান হিসেবে, ঘুম থেকে উঠে অযু করি। নামাজ পড়ি। মক্তবে যাই। মাদরাসায় যাই। মাদরাসার পাঠ্য বই হিসেবে এগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন উচিত ছিল। কেননা শিশুর এখনই সময় এগুলো শিখার। পাঠ-৪, পৃষ্ঠা নং (৫)। ‘আতা গাছে তোতা পাখি/ ডালিম গাছে মউ। এত ডাকি তবু কথা/ কও না কেন বউ।’ ৫-৭ বছরের শিশুদের বউ শিখাবার কোন প্রয়োজন আছে কী? না বাল্যবিবাহের প্রতি এটা দ্বারা উদ্বুদ্ধ করা? অথচ ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদের শিশু উপযোগী কবিতা রয়েছে তা দেয়া যেত। পাঠ-৭, পৃষ্ঠা নং ১১। এ পাঠে অ-তে ‘অজ চরে’ শব্দ আনা হয়েছে। এটা প্রায় বিলুপ্ত ও প্রায় মৃত সংস্কৃত শব্দ। একটি কঠিন হিন্দয়ানী শব্দ। যার অধিকাংশ অর্থ হিন্দুদের দেব দেবীকে বুঝায়। অভিধানে, ‘অজ’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে, ঈশ্বর, ব্রহ্মা, বিঞ্চনু, শিব, ছাগল, দশরতের পিতা ইত্যাদি। একটি কঠিন এবং হিন্দুয়ানী শব্দ মাদরাসার বইয়ে দেয়ার কোন অর্থ আছে? যে শব্দের ব্যবহার হাজারেও একবার হয় না। বরং ‘অ’ তে অযু শব্দ আনা যেত। এটা পবিত্রতা বুঝায়। পবিত্রতা সকল ধর্মে আছে। তা না করে রামায়ন আর গীতার পরিভাষা আনা হয়েছে। শিশুদের এসব শব্দ চাপিয়ে দেয়া ঠিক হচ্ছে না। এটা মাদরাসার শিক্ষার বিরুদ্ধে গভীর ষড়ন্ত্রের পরিচয় বহন করে। পাঠ-১১, পৃষ্ঠা নং ১৫। ‘এ’ দিয়ে-একতারা। একতারা গানের বাজনা। বাজনা ইসলামে তথা মাদরাসা শিক্ষায় হারাম। এখানে ‘এ’-দিয়ে একতা বা এক আল্লাহকে বুঝানো যেত। পাঠ-১৪ এর ১৮ পৃষ্ঠাতে-কবি সুফিয়া কামালের ‘ইতল বিতল’ নামে একটি ছড়া ছাপা হয়েছে। যার কোন অর্থ নাই। ‘ইতল বিতল গাছের পাতা/ গাছের তলায় ব্যাঙের ছাতা। বৃষ্টি পড়ে ভাঙ্গে ছাতা/ ডোবায় ডুবে ব্যাঙের মাথা।’ এ ছড়া থেকে শিশুদের কোন শিক্ষণীয় কিছু নেই। সুফিয় কামালের শিক্ষণীয় অনেক কবিতা রয়েছে। পাঠ-১৯, পৃষ্ঠা ২৬-এ ‘ন’ দিয়ে নদীর জলে নাও চলে। পানির বদলে হিন্দুর ‘জল’ প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত কেন? পানির প্রয়োজন হলে মুসলমানগন কখনো ‘জল’তো বলে না। আর তো মাদরাসা শিক্ষায় দেয়া হয়েছে জল শব্দ। এটা কিসের জন্য শিক্ষা? এ বইটিতে ‘বউ’ শিখাতে শিশুদের পিছন ছাড়ছে না। পাঠ-২১, পৃষ্ঠা ৩০-এ রোকনুজ্জামানের-‘বাক বাকুম পায়রা/ মাথায় দিয়ে টায়রা/ বউ সাজবে কালকি/ চড়বে সোনার পালকি।’ এ ছড়া থেকে কোমলতি শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় কিছু নেই। এগুলো আবোল-তাবোল। পাঠ-২৭ পৃষ্ঠা ৩৯-এ সুকুমার রায়ের-‘চলে হন হন ছোটে পনপন...।’ শিশুদের জন্য কিছুই শিক্ষণীয় নেই। এগুলো তামাশা ছাড়া কিছু নয়। পাঠ-৪০ পৃষ্ঠা ৫২-তে ‘ে া’ দিয়ে বাক্য গঠন বুঝাতে গিয়ে ‘ঢোলে’র ছবি দেয়া হয়েছে। ঢোলের সাথে মাদরাসার শিক্ষার্থী শিশুদের তো কোন সম্পর্ক নেই। ঢোলের সাথে হিন্দু শিশুদের সম্পর্ক থাকতে পারে। তার মানে কি ভবিষ্যতে মাদরাসায় ঢোল বাজাতে হবে? পাঠ-৪৬, পৃষ্ঠা ৫-এ ‘শুভ ও দাদিমা’ এটা মুসলমান সমাজে ব্যবহার নেই। আছে মুসলিম রীতিনীতি। দাদীর আশীর্বাদ- ‘বেঁচে থাকো ভাই’। এ ধরনের ডায়ালগ ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে বলা হয়। মুসলমানরা বলেন বা মাদরাসায় শিক্ষা দেয়া হয়, আল্লাহ তোমার উপর রহমত ও বরকত দিন। পাঠ-৪৯ পৃষ্ঠা ৬৩-তে ‘মুমুর সাত দিন’। ‘মুমু রোজ মাদরাসায় যায়... বৃহস্পতিবার ছবি আঁকে। শুক্রবার ছুটির দিন। ওইদিন সে খেলাধুলা করে।’ শুক্রবার বন্ধ দেয়া হয়েছে শুধু খেলাধুলার জন্য? অথচ এ দিন বন্ধ হলো পবিত্র জুমার নামাজের জন্য। এ দিন জুমার নামাজের কথা বলা হলো না, এ দিন কবরস্থানে গিয়ে মৃত আত্মীয়স্বজনের জন্য যিয়ারত করে দোয়া করি ... ইত্যাদি বলা হলে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত শব্দ হতো। আর ছবি আঁকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। অথচ রাসূল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন ছবি অংকনকারীদের বেশি আযাব দেয়া হবে। মাদরাসায় পড়ায়ে কী আমাদের আযাব অর্জন করতে হবে? আর অর্থপূর্ণ নামটাও পাওয়া গেল না! মুমু একটা নাম হলো? অতচ হাশরের দিন নামের কারণে অনেকে নাজাত পাবে। ইবতেদায়ী তৃতীয় শ্রেণি-‘আমার বাংলা বই’ : সংকলন, রচনা ও সম্পাদনা, শফিউল আলম, মাহবুবুল হক, সৈয়দ আজিজুল হক, নুরজাহান বেগম। তারা প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’ও সম্পাদনা করেছেন। ইবতেদায়ী তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’র ‘স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে’ পাঠের একটি লাইনে লেখা রয়েছে- ‘আজ বৃহস্পতিবার। এই দিন শেষের দুই পিরিয়ডে অন্য রকম কাজ হয়। আনন্দে ভরে ওঠে ছাত্রছাত্রীদের মন। এই দুই পিরিয়ডে কোনো দিন গান শেখানো হয়’। লেখার নিচে রয়েছে ছেলেমেয়ের পায়ে পায়ে হাতে হাত রেখে আলাপ আলোচনা করছে এমন কয়েক জনের একটি ছবি। মাদরাসায় গান শিখানো হয় এটা কোন ধরনের কথা? আর ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসার ছবি দিয়ে কী বুঝানো হচ্ছে? অথচ এখানে দেয়া যেত কুরআন তেরাওয়াত, ইসলামী সঙ্গিত বা হামদ-নাত শেখানো হয়। ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসা ও গায়ে গায়ে লাগিয়ে বসা ইসলাম নিষেধ করেছে। বরং তা গুনাহের কাজ। বরং পৃথকভাবে বসা হচ্ছে উত্তম। এ অভ্যাস ছোটবেলা থেকে গড়ে তোলার সময়। অথচ তা না করে উল্টো ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি বসার ছবি দিয়ে যেন বুঝানো হলো তা এখন থেকে করতে হবে। এ শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা ধ্বংসের পায়তারা। নিঃসন্দেহে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করার একটি ষড়যন্ত্র। এ পাঠের ৩২ পৃষ্ঠায় রয়েছে, ‘খুশিতে সকলে এক সঙ্গে হাততালি দিল’।
No comments:
Post a Comment